জামাতের রোহিঙ্গা পীরিতির নেপথ্যে…

জামাতের রোহিঙ্গা পীরিতির নেপথ্যে…

ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ইসলাম শেষ হয়ে যাচ্ছে এই মোয়া মধ্যপ্রাচ্যের শেখদের কাছে একসময় চললেও তারা বিলাতি সুরা ও বলিউডি সাকির মদিরতা কাটিয়ে আবিস্কার করে এসবই ভুংভাং। ওই মিসকিনদের দেশে ইসলাম বহাল তবিয়তেই আছে। এই অবস্থায় জামাতের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসে রোহিঙ্গারা।

৯১-৯২ সালে বিএনপি-জামাত জোটের প্রথম শাসনামলে আড়াই লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এদের একটি স্বাধীন আবাসভূমির স্বপ্ন দেখিয়ে শুরু হয় জামাতের বিশাল কার্যক্রম। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশানের তত্বাবধানে শুরুত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা ফেরত গেলেও ২০-২৫ হাজার নাছোড়বান্দা শিবির স্থাপন করে খুটি গাড়ে। ফেরত আসে আরো লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিপুল সংখ্যক উপজাতিকে বাস্তভিটা ছাড়া করে এদের আবাসনের ব্যবস্থা করে জামাত তাদের প্রভাব খাটিয়ে। আইএসআইর তত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের অনেকগুলো প্রশিক্ষণ ক্যাম্প খোলা হয়। গঠন করা হয় একাধিক জঙ্গী দল। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে:আরাকান রোহিঙ্গা ফোর্স, ইসলামিক সলিডারিটি ফ্রন্ট, আরাকান পিপলস আর্মি, লিবারেশন মায়ানমার ফোর্স,আরাকান মুজাহিদ পার্টি, রোহিঙ্গা ইনডিপেন্ডেন্ট ফোর্স, রোহিঙ্গা ইনডিপেন্ডেন্ট আর্মি, রোহিঙ্গা প্যাট্রিওটিক ফ্রন্ট, রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন, আরাকানি রোহিঙ্গা ইসলামিক ফ্রন্ট, ওয়ার্ল্ড ইসলামিক ফ্রন্ট ফর জিহাদ।

এবার দুটো উৎসে রোহিঙ্গাদের বিক্রি করে টাকা কামানো শুরু করে জামাতে ইসলামী। সৌদি ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে বিপন্ন মুসলমানদের সাহায্য ও পুনর্বাসনের নামের আসতে থাকে কোটি কোটি ডলার। অন্য দিকে খোমেনি মডেলের ইসলামী বিপ্লবের আকাঙ্খা জানিয়ে ইরান থেকে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগ্রামের দীক্ষা দেওয়ার অর্থ। এসময় যেসব দাতব্য সংগঠন ও এনজিওর মাধ্যমে এইসব তৎপরতা চালানো হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সৌদি আরবের আল-হারমেইন ফাউন্ডেশন, রিভাইভাল অব দ্য ইসলামিক হেরিটেজ সোসাইটি, রাবিতা আল আলম আল ইসলামী,সোসাইটি অব সোশাল রিফর্মস,কাতার চ্যারিটেবল সোসাইটি, আল মুনতাদা আল ইসলামি, ইসলামিক রিলিফ এজেন্সি, আল ফোরকান ফাউন্ডেশন, ইন্টারন্যাশনাল রিলিফ অর্গানাইজেশন, কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটি, দ্য মুসলিম এইড বাংলাদেশ।

কৈয়ের তেলে কৈ ভাজা জামাত এদিকে আরো চমৎকার কিছু কাজ সেরে ফেলে। ভুয়া কাগজ পত্র দিয়ে এসব রোহিঙ্গার বাংলাদেশী নাগরিকত্ব বানিয়ে দেয়। বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে এদের পাঠায় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। বিশাল এক ভোটার ব্যাংক ও অনুগত এক জনশক্তি জুটে যায় তাদের।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা সবচেয়ে বড় এনজিওটির নাম রাবিতা ইসলামী যার পরিচালক কুখ্যাত আলবদর মীর কাশেম আলী।বসে খেলে রাজার ভান্ডেও টান পড়ে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে খোলাম কুচির মতো টাকা ওড়ানো জামাতেরও ফান্ড শর্ট পড়েছে। এই মুহূর্তে রোহিঙ্গা ইস্যুতেই বড় অংকের অনুদান মিলতে পারে তাদের।

আমাদের বিহারী অভিজ্ঞতা আছে। ধর্মীয় নৈকট্যের দোহাই দিয়ে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিলো তাদের, অথচ ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক নৈকট্যে তারা পাকিস্তানীদের মতোই। এর জেরটা আমরা টের পেয়েছিলাম ১৯৭১ সালে। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সহযোগী জামাতে ইসলামীর রাজাকার-আল বদরদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নৃশংসতা দেখিয়েছিলো বিহারীরা। শুধু ইসলামের প্রতি আনুগত্যের নামে। তেমনি আরেকদল নির্মম খুনীবাহিনী তৈরি করেছে জামাত রোহিঙ্গাদের দিয়ে।এদের ব্যবহার করে নানা খাতে টাকা তো আসেই, আর জিহাদী জোশে সময়মতো ব্যবহার করারও একটা উপায় রেখে দিয়েছে। সঠিক সময়ের অপেক্ষায় আছে মাত্র তারা। নারায়ে তকবীর বলে বিহারীদের মতো বাঙালীদের নির্মুলে নৃশংস হত্যায় মাততে দুবার ভাববে না রোহিঙ্গারা জামাতিদের ডাকে।

এক কথায় রোহিঙ্গা মানেই জামাতের কাছে অনুগত ভোটার, ক্যাডার এবং নতুন অর্থের উৎস। রাজনৈতিক বেশ্যা চীনা বাদামদের দিয়া মানবতার গান গাইয়ে সেই উৎসমুখ ব্যাপ্তি দিতে মরিয়া তারা।