স্বাধীনতার বিস্মৃত সেই ডাক-হরকরাদের কথা
স্বাধীনতার পর এ নিয়ে কোনো কথা ওঠেনি। রক্তাক্ত বাংলাদেশ কার ডাকে, কার নামে স্বাধীন হয়েছিলো এ নিয়ে প্রশ্ন করেনি কেউ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে হত্যা করার পরপরই শুরু হয়ে গেলো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বেআব্রু করার চক্রান্ত। বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের এবং হত্যাকাণ্ডের বেনিফিশিয়ারীদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ইচ্ছেমতো লেখা হতে লাগলো তা। আর পাঠ্যবই থেকে শুরু করে নানা সংবাদমাধ্যম ব্যবহার করে গেলানো হলো নতুন প্রজন্মকে। তবুও শেষ রক্ষা হয় না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ছাইচাপা আগুনটা ফের দাউদাউ জ্বলে ওঠে জ্বালিয়ে দেয় মিথ্যের যাবতীয় বেসাতি। স্বাধীনতার ঘোষণা কে দিয়েছেন এ নিয়ে এখন আর নতুন প্রজন্ম বিভ্রান্ত নয়। তাদের পূর্বসূরী যারা বিভ্রান্ত হয়েছিলেন, তারাও কাটিয়ে উঠেছে তা। এ পর্যায়ে এসে চলুন জানি কিছু অকুতোভয় স্বাধীনতা সংগ্রামীর কথা, যারা নিজের জীবন বাজী রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাক ছড়িয়ে দিয়েছিলেন গোটা বাংলায়।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সন্ধ্যার সময় ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস সিগনাল সেন্টারে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলো পাকিস্তানীরা। অপারেশন সার্চলাইট শুরু হওয়া মাত্র নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে পিলখানা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় তারা। সেই কালরাতে সোয়া বারোটার দিকে নাবিস্কো বিস্কিটের একটি টিন হাতে ধরা পড়েন সিগনাল কোরের সুবেদার মেজর শওকত আলী। সেই বিস্কিটের টিনটি ছিলো আসলে একটি ট্রান্সমিটার। তার কাছে আরো পাওয়া যায় বঙ্গবন্ধুর লিখিত একটি মেসেজ : This may be my last message, from today Bangladesh is independent. I call upon the people of Bangladesh where ever you might be and with what ever you have to resist the army of occupation to the last. Your fight must go on until the last soldier of the Pakistan occupation army is expelled from the soil of Bangladesh and final victory is achieved. [Message embodying declaration of Independence sent by Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman to Chittagong shortly after midnight of 25th March, i.e. early hours of 26th March 1971 for transmission throughout Bangladesh over ex-EPR transmitter; বঙ্গবন্ধু স্পিকস : বাংলাদেশ সরকার পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের বহির্বিশ্ব প্রচার বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত পুস্তিকা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, তৃতীয় খন্ড, পৃ.১] সেটি ট্রান্সমিটরত অবস্থাতেই গ্রেপ্তার হয়ে যান শওকত। রাত সাড়ে এগারোটা থেকেই মৃত্যুকে অবজ্ঞা করে কাজটা করে যাচ্ছিলেন তিনি।
উত্তাল সেই মার্চের শুরু থেকেই ইপিআর, মগবাজার ওয়ারলেসসহ বিভিন্ন জায়গায় গোপনে যোগাযোগ করেছিলেন মুজিব। একান্ত অনুগত কয়েকজনকে দিয়ে রেখেছিলেন নির্দেশনা। এর একটি ভাষ্য মিলে বুয়েটের অধ্যাপক নুরুলউল্লাহর (জগন্নাথ হলের গণহত্যার ভিডিওচিত্রটি ধারণ করেছিলেন যিনি) সাক্ষাতকারে : …আমাকে বঙ্গবন্ধুর বাড়ীর একেবারে ভিতরের এক প্রকোষ্ঠে নিয়ে যাওয়া হলো। আমি প্রথমে ব্যাপারটার গুরুত্ব অতোটা উপলব্ধি করতে পারিনি। অনেক ভিতরের একটা কক্ষে নিয়ে যাওয়ার পর আমি দেখলাম সেখানে সোফার উপর তিনজন বসে রয়েছেন। মাঝখানে বঙ্গবন্ধু। তার ডান পাশে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও বাঁপাশে তাজউদ্দিন সাহেব…তিনি সোফা থেকে উঠে এসে আমাকে ঘরের এককোণে নিয়ে গেলেন। আমার কাঁধে হাত রেখে অত্যন্ত সন্তর্পনে বললেন, নুরুল উল্লাহ, আমাকে একটা ট্রান্সমিটার তৈরি করে দিতে হবে। আমি যাবার বেলায় শুধু একবার আমার দেশবাসীর কাছে কিছু বলে যেতে চাই। তুমি আমাকে কথা দাও, যেভাবেই হোক একটা ট্রান্সমিটার আমার জন্য তৈরি রাখবে। আমি শেষবারের ভাষণ দিয়ে যাব।… ১৯৬৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা শওকত আলী নিজের কোয়ার্টারেই গোপনে কয়েকটি ট্রান্সমিটার তৈরী করেছিলেন। বিশ্বস্ত কয়েকজন সঙ্গীকে তা দিয়ে নির্দেশ দেন সঠিক সময়ের জন্য প্রস্তুত থাকার। এদের মধ্যে দুয়েকজন পিলখানার বাইরে থেকে মেসেজ ট্রান্সমিট করতে সফল হন। তবে তাদের কারো নাম জানা যায়নি।
গ্রেপ্তারে পর ১১ নম্বর ব্যারাকে নিয়ে গিয়ে অমানুষিক অত্যাচার করা হয় শওকতকে। জেরা করে তথ্য আদায়ের জন্য বাঁচিয়ে রাখা কয়েকজন ইপিআর সদস্যের সঙ্গে তাকে এরপর নিয়ে যাওয়া হয় মোহাম্মদপুর শরীরচর্চা কলেজের (পরে আলবদর সদরদপ্তর) টর্চার সেন্টারে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে আরো ছিলেন সুবেদার মোল্লা ও সুবেদার জহুর মুন্সি। এ দুজন সপরিবারে পিলখানার বাইরে থাকতেন। তাদেরকে সন্দেহ করা হয় বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার সেই বার্তাটি গোপনে পিলখানায় আনার জন্য। এই অভিযোগে বর্বর নির্যাতনের শিকার হন তারা।
শওকতের স্ত্রী অধ্যাপিকা (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) ফিরোজা বেগম তার মেয়ে সেলিনা পারভীনকে (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপিকা) নিয়ে স্বামীর খোজ করতে গিয়ে জানতে পারেন দেশদ্রোহীতার অভিযোগে প্রাণদন্ড দেওয়া হয়েছে তাকে। সিগনাল কোরের কমান্ডার কর্ণেল আওয়ান সোজাসাপ্টা জানিয়ে দেন : আপনার স্বামীকে কিভাবে বাচাবো বলুন? তিনি ইপিআর কোয়ার্টার থেকে মুজিবের ঘোষণা ট্রান্সমিট করা অবস্থায় ট্রান্সমিটারসহ ধরা পড়েছেন। তার কাছে মুজিবের লিখিত মেসেজ পাওয়া গেছে। ফিরোজা বেগম এরপর তার দেবর মেজর সাখাওয়াত আলীর (তখন পাকিস্তানে বন্দী) দুই অবাঙালী বন্ধু মেজর এজাজ মাসুদ ও ক্যাপ্টেন আখতারের সঙ্গে ঢাকা সেনানিবাসে গিয়ে দেখা করেন। তাদের মুখেও শোনা যায় একই কথা।
অনেক পরে রাজশাহী ইপিআর সিগনাল কোরের সুবেদার নাসিম আলীর কাছ থেকে স্বামীর মৃত্যুর ঘটনা বিস্তারিত জানতে পারেন ফিরোজা। নাসিম তা জেনেছেন অলৌকিকভাবে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়া সুবেদার আইয়ুব আলীর কাছ থেকে। ২৮ এপ্রিল পাগলায় ২৫ জন ইপিআর সদস্যকে লাইন ধরে গুলি করা হয়, যার মধ্যে আইয়ুব আলীও ছিলেন। নদী থেকে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে গ্রামবাসী। পরে একই সাক্ষ্য দেন ইপিআর জিডি ব্রাঞ্চের স্টেনোগ্রাফার নুরুল ইসলাম ও ইপিআর সদস্য আবদুল মজিদ। ১৬ ডিসেম্বর মোহাম্মদপুর থেকে তাদের উদ্ধার করেছিলো মুক্তিবাহিনী। ইপিআরের অন্য সদস্যদের উপর নির্যাতন চালানোর সময় পাকিস্তানীরা টিটকিরি মেরে বলতো-…আর তেরা সুবেদার মেজর শওকত মুজিবকা ব্রিগেডিয়ার বন গ্যায়া…
জানা যায় শওকতের সামনেই সুবেদার আবদুল হাই ও সুবেদার জহুর মুন্সীর উপর লোমহর্ষক অত্যাচার চালানো হয়। দুজনকে পেরেক দিয়ে গাঁথা হয় দেয়ালে। সেই অবস্থাতেই মারা যান তারা। তাতেও মনোবল ভাঙ্গেনি শওকতের। কোনো তথ্যই তিনি প্রকাশ করেননি। জেরার সময় প্রতিটি নোখ তুলে ফেলা হয় তার। জ্বলন্ত সিগারেট আর তপ্ত লোহা দিয়ে ছ্যাকা দেওয়া হয় গোটা শরীরে। মাথার চুল টেনে ছেড়া হয়। এরপর লোহার শিক ঢুকিয়ে অন্ধ করে দেওয়া হয় শওকতকে। তাতেও মৃত্যু হয়নি এই বীরের, এবং তিনি মুখ খোলেননি। ২৮ এপ্রিল রাতে অবশেষে মৃতপ্রায় সুবেদার মেজর শওকত আলীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। আর লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয় নদীতে। আজ এতদিন পরেও তার কথা কেউ বলে না।
২৫ মার্চের সে রাতে একটা দশের দিকে চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদী অফিসের টেলিপ্রিন্টারে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার টেলেক্সটি পান অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ। একই মেসেজ রাত সোয়া বারোটায় ফৌজদারহাট ওয়ারলেস অফিসে রিসিভ করেন সুপারভাইজার নুরুল আমিন। মেসেজটি পাঠানো হয়েছিলো মগবাজার ওয়ারলেস অফিস থেকে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে তা পাঠিয়ে দেন নন্দনকানন ওয়ারলেস অফিসে ডিউটিতে থাকা অপারেটর মাহতাব উদ্দীনের কাছে। তার কাছ থেকেই আওয়ামী লীগ নেতা জহুর আহমেদসহ বাকিরা মেসেজটির অনুলিপি সংগ্রহ করেন এবং শহরে মাইকিং করে ছড়িয়ে দেন। সেদিন রাত থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত মেসেজটি কপি করা ও দেশের বাকি জেলাগুলোর ওয়ারলেস অফিসগুলোতে পাঠানোর দায়িত্বটি পালন করেন মাহতাব। ১৯টি ডিস্ট্রিক্ট ওয়ারলেস অফিসে মেসেজটি পাঠানোর আগ পর্যন্ত এক গ্লাস পানি পর্যন্ত মুখে তুলেননি তিনি। স্বাধীনতার পর মূল্যায়িত হননি এমন লাখো স্বাধীনতা সংগ্রামীর মধ্যে মাহতাবও একজন। তার সঙ্গে স্যালুট সেই অনামা অপারেটরকে যিনি মগবাজার থেকে মূল মেসেজটি ট্রান্সমিট করেছিলেন। তিনি কে এবং তার ভাগ্য কি জানা যায়নি। কারণ রাত বারোটার সময় মগবাজার ওয়ারলেস অফিস দখলে নেয় পাকিস্তানী সেনাবাহিনী।
১৯৯০ সালের ২৬ মার্চ ‘দৈনিক দেশ’ নামের একটি অধুনালুপ্ত পত্রিকায় হাজী গোলাম মোরশেদ একটি স্মৃতিকথা লেখেন। ২৫ মার্চ রাতে দীর্ঘসময় বঙ্গবন্ধুর বাড়ীতে ছিলেন তিনি। মোরশেদ লিখেছেন : রাত ১১টার দিকে বলধা গার্ডেন থেকে একটা টেলিফোন এলো। আমি ধরলে অপর প্রান্ত থেকে জানালো : রেডিও মেসেজ প্রচার করা হয়ে গেছে। এখন মেশিন নিয়ে কি করবো? আমি দৌড়ে গিয়ে খবরটা জানাতে বঙ্গবন্ধু বললেন, মেশিন রেখে ওকে পালিয়ে যেতে বলো। মোরশেদের ভাষ্যেই আমরা জানি যে স্বাধীনতার পর ২৬ মার্চ মগবাজার টিএন্ডটি থেকে ওয়ারলেস ও টেলেক্সে চট্টগ্রামে পাঠানো মেসেজটি বাঁধিয়ে বঙ্গবন্ধুকে উপহার দিয়েছিলেন সেখানকার কর্মচারীরা। তবে বলধা গার্ডেনের ব্যাপারে বিস্তারিত তিনি বলতে পারেননি।
তবে এ ব্যাপারে বুয়েটের একজন অধ্যাপক ও শেষ বর্ষের একজন ছাত্রের সংশ্লিষ্ঠতা জানা যায়। যদিও অধ্যাপক নুরুলউল্লাহ তার সাক্ষাতকারে তার বিভাগ থেকে বানানো ট্রান্সমিটারটি পরে ব্যবহার করা হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন। এ ব্যাপারটি সম্পর্কে কিছুটা জানেন মুজিব নগর সরকারের তথ্যসচিব আনোয়ারুল হক খান। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের কাছ থেকে। ২৩ মার্চ রাতেই বলধা গার্ডেনে লো ফ্রিকুয়েন্সি রেডিও ট্রান্সমিটারটি বসানো হয়। আর ২৫ মার্চ রাতে ব্যবহার করা হয়। মোরশেদ রাত ১১টার কথা যে স্মৃতিকথায় বলেছেন তা অবশ্য কোনো বিচারেই খাটে না। কারণ প্রতিটি মেসেজই ট্রান্সমিট হয়েছে রাত সাড়ে এগারোটার পর। পকিস্তানীরা প্রথম গুলিটি ছোড়ার সঙ্গে সঙ্গে। পিলখানায় থেকে শুরু করে মগবাজার ওয়ারলেস অফিসে রাত ১২টার মধ্যেই এসব মেসেজ পাঠানোর কাজ শেষ হয়ে যায়। আনোয়ারুল হক খান জানিয়েছেন বিশ্বস্ত কিছু লোকের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি সম্প্রচার করা হয় বলধা গার্ডেনের সেই রেডিও ট্রান্সমিটার থেকে। এটি ছিলো মুজিবের নিজের গলায় রেকর্ড করা। এর সমর্থন মিলেছে টিক্কা খানের দেওয়া সাক্ষাতকারে : …মেরে কোডনে দেড়াতে হুয়ে এক থ্রি ব্যান্ড রেডিও লাকার দিয়া আওর কাহা, স্যার সুনিয়ে, শেখ সাব আজাদীকা এলান কর রাহা হ্যায়, আওর ম্যায়নে খুদ শেখ সাবকো রেডিও পার এক ফ্রিকুয়েন্সিসে ইন্ডিপেন্ডেন্স কা এলান করতে হুয়া সুনা, জিসকো বাগাওয়াত কাহা যা সেকতা হ্যায়। চুকে ম্যায় শেখ সাবকি আওয়াজ আচ্ছি তারা পেহছান থা… আমার কো-অর্ডিনেশন অফিসার একটি থ্রি ব্যান্ড রেডিও এনে বলল, স্যার শুনুন, শেখ সাহেব স্বাধীনতার ঘোষণা করছেন। আমি নিজে রেডিওতে শেখ সাহেবকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে শুনলাম, কারণ তার কণ্ঠস্বর আমি ভালো করেই চিনতাম। সে ঘোষণা তখন দেশদ্রোহিতার সামিল ছিল.. (জেনারেল টিক্কা খানের সাক্ষাতকার : মুসা সাদিক ও এডভোকেট রেজাউর রহমান)। একই কথা লিখেছেন পাকিস্তানী মেজর সিদ্দিক সালিক তার উইটনেস টু সারেন্ডার বইয়ে (পৃ: ৭৫) : When the first shot had been fired the voice of Sheikh Mujibur Rahman came faintly through and wave length close to that of official Pakistan Radio. In what must have been, and sounded like a pre-recorded message. The Shiekh proclaimed East Pakistan the Peoples Republic of Bangladesh.
মুজিব নিজেও একটি মেসেজ ট্রান্সমিট করেছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। …একের পর এক দরজা খুলে কাউকে পাওয়া গেলো না। একটা রুম ভেতর থেকে আটকানো ছিলো। ওপরে ওঠার পর কে যেন আমাকে বললো বদ্ধ ঘর থেকে কেমন অদ্ভুত শব্দ আসছে, (সম্ভবত ওয়ারল্যাস ট্রান্সমিশন করছিলেন মুজিব)… (দ্য ওয়ে ইট ওয়াজ : বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা ব্রিগেডিয়ার (অব.) জহির আলম খান)। আর এটি ছিলো গ্রেপ্তারের আগে পাঠানো তার শেষ নিজের মেসেজ : Pak army suddenly attacked EPR base at Pilkhana, Rajarbag Police line and killing citizens stop street battle are going on in every street of Dhaka-Chittagong stop I appeal to the nations of the world for help stop our freedom fighters are gallantly fighting with enemies to free the motherland stop I appeal and order you all in the name of almighty Allah to fight to the last drop of blood to liberate the country stop ask Police, EPR, Bengal regiment and Ansar to stand by you and to fight stop no compromise stop Victory is ours stop drive out the last enemy from the holy soil of motherland stop convey this message to all Awami League leaders, workers and other patriots and lovers of freedom stop may Allah bless you stop Joy Bangla stop Sheikh Mujibur Rahman stop
আর এই বার্তাটিই বিভিন্ন বিদেশী দুতাবাস ও আগরতলায় ইউনাইটেড প্রেস অব ইন্ডিয়ার টেলিপ্রিন্টারে টেলেক্স হিসাবে যায়।
সূত্র : বাংলাদেশ উইনস ফ্রিডম : মুসা সাদিক, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ: সিরাজউদ্দীন আহমেদ, শেখ মুজিব : মযহারুল ইসলাম।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা : মাহবুবুর রহমান জালাল ভাই